বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন

কাশিয়ানীতে টাকা না পেয়ে ‘গরু নিয়ে গেল’ সুদখোরেরা

কাশিয়ানীতে টাকা না পেয়ে ‘গরু নিয়ে গেল’ সুদখোরেরা

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
সুদের টাকা দিতে না পারায় দেনাদারের গোয়ালঘর থেকে গরু নিয়ে গেল সুদখোরের লোকজনেরা।

ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাহুথড় গ্রামে।

এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সুদখোরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাহুথড় গ্রামের লিটন বাইন গত চার বছর আগে ক্যাবল ব্যবসার জন্য পার্শবর্তী মুকসুদপুর উপজেলার বরমপাল্টা গ্রামের সমর তালুকদারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা সুদে নেন। কয়েক মাস লাভের টাকা দেওয়ার পর তিনি আর টাকা দিতে পারেননি। এক পর্যায় লিটন বাইন লাভের টাকা বাদে আসল টাকা সমর তালুকদারকে ফেরত দিতে চান। এতে সমর তালুকদার রাজি হননি। বৃহস্পতিবার সকালে সমর তালুকদারের প্রতিবেশি কৃষ্ণ তালুকদার ও রাহুথড় গ্রামের ঠাকুর বাইন হঠাৎ করে লিটন বাইনের বাড়িতে গিয়ে তার গোয়ালঘর থেকে গরু নিয়ে চলে যায়।

লিটন বাইন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি সাড়ে তিন বছর আগের বরমপাল্টা গ্রামের সমর তালুকদারের কাছ থেকে মাসিক লাভে ৪০ হাজার টাকা সুদে আনি। কয়েক মাস লাভ দেয়ার পর আর্থিক সমস্যার কারণে আসল-লাভ কোন টাকাই দিতে পারিনি। বৃস্পতিবার সকালে সমরের প্রতিবেশি কৃষ্ণ তালুকদার ও তার মামা আমার প্রতিবেশি ঠাকুর বাইন আমার গোয়াল থেকে আমার মায়ের পোষা বকনা গাভীটি খুলে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আমি বাঁধা দিতে গেলে আমার বাঁধা উপেক্ষা করে তারা গরু নিয়ে চলে যায়। আমি গরু আনার চেষ্টা করলে তারা আমার ওপর চড়াও হয় এবং আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। পরে বিষয়টি আমি উজানি ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি বোস, ইউপি সদস্য খোকন বালাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য লোক জানাই। তাদের হস্তক্ষেপে ও সামাজিকভাবে সমঝোতার আশ^াসে গরু ফেরত দিয়ে যায়।

রাহুথড় গ্রামের পংকজ সরকার বলেন, ‘আমার সামনে দিয়ে লিটনের নিয়ে যেতে দেখেছি। পরে কি হয়েছে আমি জানি না।’

গোয়াল থেকে গরু নিয়ে আসার কথা স্বীকার করে কৃষ্ণ তালুকদার বলেন, ‘গত ৪ বছর আগে আমার প্রতিবেশি সমর তালুকদারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা সুদে নিয়ে লিটন বাইনকে দেই। অনেক দিন হলেও টাকা ফেরত দেয় না। টাকা চাইলে আজকাল করে নানা তালবাহানা করে। বুধবার টাকাটা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে আমি ও আমার মা লিটনদের বাড়িতে টাকার জন্য গেলে আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। পরে আমার মামা ঠাকুর বাইনের সহযোগিতায় লিটনের বাড়ি থেকে গরু ধরে নিয়ে আসি। রাহুথড় বাজারের কাছে পৌঁছালে লিটন আমাদের দু’জনকে মারধর করে ও কাছে থাকা মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে।’

সমর তালুকদারের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

কাশিয়ানী থানার ওসি মোঃ আজিজুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved 2018 Banglarnayan
Design & Developed BY ThemesBazar.Com